ইমপালস ও কারেক্টিভ ওয়েভ
ইমপালস ও কারেক্টিভ ওয়েভ বিস্তারিত জানা খুব জরুরী।।
#### ইমপালস ওয়েভ
ইলিয়ট ওয়েভ সার্কেলে 1, 2, 3, 4, 5 এই পাঁচটি শক্তিশালী প্রাইস মুভমেন্টকে একসাথে ইমপালস ওয়েভ বলা হয়। ইমপালস ওয়েভ ট্রেন্ডের দিকে মুভ করে। আমরা যখন স্টক মার্কেট চার্ট বা কোনো কোম্পানির শেয়ার চার্ট দেখি, প্রায়ই প্রাইস একদিকে উঠতে বা নামতে থাকে। আমরা একে শক্তিশালী ডাউনট্রেন্ড বা আপট্রেন্ড বলে থাকি, এটি মূলত ইমপালস মুভমেন্ট।
ইমপালস ওয়েভ পাঁচটি ওয়েভ দিয়ে গঠিত হয় (1, 2, 3, 4, 5)। এর মধ্যে ওয়েভ 1, 3, 5 হলো ইমপালস, যা স্বতন্ত্রভাবে শক্তিশালী মুভমেন্ট। ওয়েভ 2 ও 4 কারেকশন বা কারেক্টিভ ওয়েভ হিসেবে কাজ করে।
#### কারেক্টিভ ওয়েভ
ইলিয়ট ওয়েভ সার্কেলে A, B, C এই তিনটি ট্রেন্ডের বিপরীত প্রাইস মুভমেন্টকে একসাথে কারেক্টিভ ওয়েভ বলা হয়। কারেক্টিভ ওয়েভ ৩ টি (A, B, C) মিলে প্রাইসের কারেকশন সম্পন্ন করে।
ইমপালস ওয়েভের উদাহরণ
উপরের চিত্রটি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বাজারের মূল্যে উর্ধ্বগামী মুভমেন্ট হয়েছে যেখানে ইমপালস ওয়েভের ৫টি ওয়েভের মধ্যে ৩ টি দীর্ঘ এবং শক্তিশালী প্রাইস মুভমেন্ট (১, ৩, ৫) ইমপালস ওয়েভ এবং এর মাঝে থাকা (২ ও ৪) ছোট প্রাইস নিম্নগামী মুভমেন্টকে কারেকশন বলা হয়। অর্থাৎ একটি ইমপালস ওয়েভে ৩ টি ইন্টারন্যাল ইমপালস এবং ২ টি কারেক্টিভ ওয়েভ রয়েছে।
#### ইমপালস ওয়েভের বিশ্লেষণ
ইলিয়ট ওয়েভের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে ওয়েভ থাকতে পারে। একটি নিম্নগামী ট্রেন্ড থেকে কিভাবে ইমপালস বা মোটিভ ওয়েভ মুভমেন্ট করে তা নিচের চিত্রে দেখানো হলো।
ট্রেন্ড ব্রেক বা চ্যানেল ব্রেক থেকে ওয়েভ ১ শুরু হয়ে কারেক্টিভ ওয়েভ ২ করে এবং ওয়েভ ৩ পর্যন্ত চলতে থাকে। ওয়েভ ৩ সাধারণত একটি দীর্ঘ মুভমেন্ট হয় এবং এটি এক পর্যায়ে কিছু প্রাইস কারেকশন করে যা ওয়েভ ৪ হিসেবে পরিচিত। এই কারেকশন শেষে প্রাইস আবার ট্রেন্ডের দিকে ফেরত যায় এবং নতুন করে প্রাইসকে আগের মত একই দিকে নিয়ে যায়, এটি হলো ওয়েভ ৫।
কারেক্টিভ ওয়েভের উদাহরণ
উপরের চিত্রে ২ টি নিম্নগামী ও ১ টি উর্ধ্বগামী ছোট কারেকশনকে কারেক্টিভ ওয়েভ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
#### কারেক্টিভ ওয়েভ A, B, C
ওয়েভ ৫ শেষ হওয়ার পর প্রাইস কারেকশন শুরু করে এবং A, B, C ওয়েভ গঠন করে। এই কারেক্টিভ ওয়েভ বিভিন্ন সাব/উপ কারেক্টিভ প্যাটার্ন (যেমনঃ ফ্ল্যাট, জিগজাগ, ট্রায়াঙ্গাল প্যাটার্ন) এর মাধ্যমে তৈরি হয়।
#### কারেক্টিভ ওয়েভের উপাদান
ওয়েভ A একটি ইমপালস মুভমেন্ট যা মূল ইমপালস ওয়েভের বিপরীতে মুভমেন্ট করে। ওয়েভ B কারেকশন মুভমেন্ট করে। ওয়েভ C আবার ওয়েভ A এর দিকে প্রাইসকে মুভ করায় এবং এটি একটি ইমপালস মুভমেন্ট।
কারেক্টিভ ওয়েভের ৩ টি ওয়েভের মধ্যে ২ টি ওয়েভ (A ও C) ইমপালস হিসেবে শক্তিশালী মুভমেন্ট করে এবং B ওয়েভ কারেক্টিভ ওয়েভ হিসেবে দুর্বলভাবে কাজ করে। এভাবে এরা তিনজন মিলেই একটি ইমপালস ওয়েভের বিপরীতে কারেকশন করে এবং কারেক্টিভ ওয়েভ গঠন করে।
#### ইমপালস ও কারেক্টিভ ওয়েভের চিত্র
নিচের চিত্রে ইমপালস ও কারেক্টিভ ওয়েভের চিত্র দেয়া হলো। আবার এই ওয়েভগুলোর মধ্যে কয়েক স্তরে ওয়েভ হয়ে থাকে। নিচের চিত্রটি বোঝার চেষ্টা করুন।
#### ইমপালস ও কারেক্টিভ ওয়েভের উদাহরণ
একটি নিম্নগামী ট্রেন্ড মার্কেট প্রাইস মুভমেন্ট থেকে কিভাবে ট্রেন্ড পরিবর্তন করে ইমপালস বা মোটিভ ওয়েভ মুভমেন্ট করে তা নিচের চিত্রে দেখানো হয়েছে। এর সাথে বিবরণগুলো মিলিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন। চার্টে দেখলে আমরা ট্রেন্ড ব্রেক বা চ্যানেল ব্রেককে ট্রেন্ড পরিবর্তন হিসেবে মনে করি। আমরা একটি ট্রেন্ড শেষের থেকে প্রাইস মুভমেন্ট পরিবর্তন থেকে ওয়েভ শুরু হিসেবে গণনা করে ওয়েভ ১ পর্যন্ত চলতি মার্কেট প্রাইস থেকে ওয়েভ ৩ তখনই বের করতে পারি যখন মার্কেট প্রাইস একবার শুরু থেকে ওয়েভ ১ হয়ে আবার ওয়েভ ২ প্রাইস রিট্রেস করেছে। ওয়েভ ১ শেষকে অতিক্রম করে যাওয়া শুরু থেকে আমরা ওয়েভ ১, ২ বুঝতে পারি এবং অনুমান করি ওয়েভ ৩ এর দিকে মার্কেট প্রাইস যাত্রা শুরু করেছে। নিচের চিত্রগুলো দেখুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন।
ওয়েভ ৩ মূলত একটি সুদীর্ঘ মুভমেন্ট হয় এবং এই সুদীর্ঘ মুভমেন্টের এক পর্যায়ে মার্কেট কিছু প্রাইস কারেকশন হয় এবং এই কারেকশনকে ওয়েভ ৪ বলা হয়। এই কারেকশন শেষে মার্কেট আবার ট্রেন্ডের দিকে ফেরত যায় এবং এই ট্রেন্ড নতুন করে প্রাইসকে আগের মত একই দিকে নিয়ে যায়, এবং এই মুভমেন্টকে ওয়েভ ৫ বলা হয়।
—
এভাবে ইমপালস ও কারেক্টিভ ওয়েভের সাহায্যে আপনি বাজারের প্রাইস মুভমেন্টের ট্রেন্ড ও কারেকশন বুঝতে পারবেন। এটি একটি শক্তিশালী টুল যা আপনাকে প্রাইস মুভমেন্টের ভবিষ্যৎ প্রেডিক্ট করতে সাহায্য করে।
Add a Comment
You must be logged in to post a comment