ইলিয়ট ওয়েভ থিউরি

ইলিয়ট ওয়েভ থিউরি শিখুন (পর্ব- ১)

ইলিয়ট ওয়েভ থিউরি শিখুন (পর্ব- ১)…

ইলিয়ট ওয়েভ একটি নির্দিষ্ট স্ট্র্যাটেজি নয় যা সরাসরি ট্রেডের সিগন্যাল প্রদান করবে। এটি মার্কেট মুভমেন্টের সাইকোলজি বুঝা এবং কিছু নির্দিষ্ট প্যাটার্ন খুঁজে বের করার উপর ভিত্তি করে কাজ করে। ইলিয়ট ওয়েভের প্যাটার্নগুলো বারবার মার্কেট প্রাইসে দেখা যায়। এই প্যাটার্নগুলো বুঝতে পারলে ভালো কিছু ফিক্সড ট্রেড কনফার্ম করতে পারবেন।

অনেক ট্রেডার ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে ট্রেড করতে গিয়ে ইনভেস্ট হারায় এবং অনেকে ইলিয়ট ওয়েভ ভুলভাবে প্র্যাকটিস করে। সঠিক গাইডলাইনের মাধ্যমে প্রচুর প্র্যাকটিস করতে হবে।

### ইলিয়ট ওয়েভ থিউরি ইতিহাস

ইলিয়ট ওয়েভ তত্ত্বের প্রবর্তক রালফ নেলসন ইলিয়ট (১৮৭১-১৯৪৮)। তিনি ছিলেন একজন আমেরিকান হিসাবরক্ষক এবং লেখক। প্রায় ৭৫ বছরের স্টক মার্কেটের তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনি দেখেন যে, পুঁজিবাজারের মুভমেন্ট যতটা বিশৃঙ্খল মনে হয়, আসলে তেমন নয়। ইলিয়ট মার্কেটের প্রাইস মুভমেন্টকে নির্দিষ্ট প্যাটার্নে বিভক্ত করেন যা বারবার পুনরাবৃত্তি হয়।

elliott wave

ইলিয়ট ১৮৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে অ্যাকাউন্টিং পেশায় প্রবেশ করেন এবং মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোতে রেলপথ সংস্থাগুলির কার্যনির্বাহী পদে কাজ করেন। ১৯০৩ সালে, তিনি মেরি এলিজাবেথ ফিৎসপ্যাট্রিককে বিয়ে করেন। এরপর নিউ ইয়র্ক সিটিতে একটি সফল পরামর্শক ব্যবসা শুরু করেন। ১৯২৪ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর তাকে নিকারাগুয়ার চিফ অ্যাকাউন্ট্যান্ট পদে নিয়োগ দেয়।

১৯৩০-এর দশকের শুরুর দিকে, ইলিয়ট ৭৫ বছরের স্টক মার্কেটের ডেটা নিয়ে নিয়মিত অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯৩৮ সালের আগস্টে তিনি তার তৃতীয় বই ‘দ্য ওয়েভ প্রিন্সিপাল’ প্রকাশ করেন। ইলিয়ট বলেছিলেন যে, শেয়ার বাজারের দামগুলি এলোমেলো মনে হলেও, তারা আসলে অনুমানযোগ্য এবং প্রাকৃতিক আইন অনুসরণ করে। ফিবোনাচি নম্বর ব্যবহার করে এই পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব।

ইলিয়টের মৃত্যুর পর, অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা ইলিয়ট ওয়েভ তত্ত্ব ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের পূর্বাভাস দিতে থাকেন। ফ্রস্ট এবং রবার্ট প্রেচার ১৯৭৮ সালে ‘ইলিয়ট ওয়েভ প্রিন্সিপাল’ নামে একটি বই লিখেন এবং ১৯৮০-এর দশকের উর্ধ্বমুখী বাজারের পূর্বাভাস দেন।

### ইলিয়ট ওয়েভ থিউরি মূল ধারণা

রালফ নেলসন ইলিয়টের মতে, মার্কেট ক্রমাগত চক্রে মুভ করে যা বিনিয়োগকারীদের ইমোশন দ্বারা সংঘটিত হয়। প্রাইস উপরের বা নিচের দিকে সুইং করে যা সংঘবদ্ধ সাইকোলজির কারণে ঘটে। ইলিয়ট এই সুইংগুলোকে ‘ওয়েভ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

তিনি বিশ্বাস করেন, যদি এই প্যাটার্নগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায়, তাহলে প্রাইসের পরবর্তী মুভমেন্ট অনুমান করা সম্ভব। এটি ট্রেডারদের কাছে ইলিয়ট ওয়েভকে আকর্ষণীয় করে তোলে। ইলিয়ট ওয়েভ মার্কেটে টপ ও বটম ধরার সুযোগ করে দেয়।

ওয়েভের মূল ভিত্তি হচ্ছে লেনদেনকারীদের আচরণ যা মার্কেট আচরণের পূর্বনির্ধারিত ফলাফল ঘটতে দেয় না। ইলিয়ট ওয়েভ তত্ত্ব ব্যবহার করে ট্রেডারদের বিনিয়োগের আচরণ বোঝা যায় এবং সেই অনুযায়ী পূর্বাভাস দিয়ে মার্কেট আচরণ প্রকাশ করা যায়।

 

### উপসংহার

ইলিয়ট ওয়েভ থিউরি শিখতে হলে প্রচুর প্র্যাকটিস এবং সঠিক গাইডলাইন প্রয়োজন। এটি শুধুমাত্র একটি তত্ত্ব নয়, বরং মার্কেটের সাইকোলজি বুঝতে এবং প্রাইস মুভমেন্টের প্যাটার্ন চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। ইলিয়ট ওয়েভ তত্ত্ব নিয়ে প্রচুর অধ্যয়ন এবং প্র্যাকটিস করেই আপনি সফল হতে পারবেন।

Add a Comment

You must be logged in to post a comment