Fibonacci forex ( ফিবোনাচ্চি শিখুন)
ফিবোনাচ্চি কে?
লিওনার্দো ফিবোনাচ্চি একজন ইতালীয় গণিতবিদ ছিলেন যার প্রথম প্রকাশিত “Liber Abaci” বইয়ে ফিবোনাচ্চি সংখ্যাগুলির গবেষণা করেছিলেন যার নাম দিয়েছিলেন ফিবোনাচ্চি সিরিজ। তার গবেষণায় উল্লেখ করেছিলেন প্রকৃতির অনুপাত অনুসরণ করে এই সংখ্যাগুলো একই রকম হয়: ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১, ৩৪, ৫৫, ৮৯, ১৪৪ এবং এভাবে চলতে থাকে এবং এর মধ্যে অধিক সংখ্যার সাথে পরবর্তী সংখ্যাগুলির যোগ করে সৃষ্টি করে, একটি গণিতীয় নিয়ম প্রকাশ করেছিলেন। এই নিয়ম মধ্যে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কার্যকরী প্রস্থান আছে যেমন ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট এবং এক্সটেনশন।
সিরিজটি বুঝতে হলে আসুন কিছু উদাহরণ দেখি:
১ + ১ = ২
২ + ১ = ৩
৩ + ২ = ৫
এইভাবে, আগের দুইটি সংখ্যা যোগ করে আমরা পরবর্তী সংখ্যা পাই। এই সংখ্যা গুলো আগের সংখ্যাকে পরের সংখ্যা, পরের সংখ্যাকে আগের সংখ্যা বা মাঝের সংখ্যা কিছু ক্ষেত্রে ১ বা ২ টি
সংখ্যা বাদ দিয়ে আগে পরে ভাগ করলে ও লেভেল গুলো পাওয়া যায়।
আগের সংখ্যাকে পরের সংখ্যা দ্বারা ভাগ দেন দেখবেন তাহলে আপনি ০.৬১৮ এভারেজ বেশিভাগ পাচ্ছেন। যেমন, ৩৪ / ৫৫ = ০.৬১৮ হবে। আবার, যদি আপনি সংখ্যাটিকে তার পরের পরের সংখ্যা দ্বারা ভাগ করেন, তাহলে আপনি ০.৩৮২ পাবেন। যেমন, ৩৪ / ৮৯ = ০.৩৮২ হবে।
এই রেশিওগুলোকে “গোল্ডেন রেটিও” বলা হয়ে থাকে। যদিও ফিবোনাচ্চি সিরিজের অনেক প্রয়োগ আছে, আমরা এখানে ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট এবং এক্সটেনশন নিয়ে কাজ করব।
### ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট এবং এক্সটেনশন
#### ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট লেভেল:
– ০.২৩৬
– ০.৩৮২
– ০.৫০০
– ০.৬১৮
– ০.৭৬৪
#### ফিবোনাচ্চি এক্সটেনশন লেভেল:
– ০
– ০.৩৮২
– ০.৬১৮
– ১
– ১.৩৮২
– ১.৬১৮
ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট লেভেল মূলত সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং ফিবোনাচ্চি এক্সটেনশন প্রফিটের লেভেল নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত করেন। বেশিরভাগ ট্রেডার এগুলো ট্রেডিং এন্ট্রি এবং এক্সিটের জন্য ব্যবহার করেন, তাই এটি ট্রেডিংয়ের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
### কিভাবে ফিবোনাচ্চি টুল ব্যবহার করবেন
ভয় পাবার কিছু নেই। আপনাকে এতকিছু গননা করতে হবে না। ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে ফিবোনাচ্চি টুলগুলো দেয়া থাকে। আপনাকে শুধু সুইং হাই এবং সুইং লো বের করে ফিবোনাচ্চি ড্র করতে হবে।
#### সুইং হাই এবং সুইং লো:
– **সুইং হাই:** সেই ক্যান্ডেলস্টিক যা তার আগে এবং পরের ক্যান্ডেলের চেয়ে হাই উপরে থাকে।
– **সুইং লো:** সেই ক্যান্ডেলস্টিক যা তার আগে এবং পরের ক্যান্ডেলের চেয়ে লো নিচে থাকে।
না বুঝতে পারলে, পরবর্তীতে ফিবোনাচ্চি ব্যবহার করার সময় বুঝবেন।
### ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট
ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট আপট্রেন্ডের মার্কেটে প্রাইস যখন রিট্রেস করবে তখন বাই ডাউনট্রেন্ডে মার্কেটে রিট্রেসমেন্টের সময় সেল পজিশন করা। ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট মূলত ট্রেন্ডিং মার্কেটে সবচেয়ে ভাল কাজ করে।
### কিভাবে ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট ড্র করবেন?
#### বাই ট্রেডের জন্য:
সুইং লো প্রাইস থেকে সুইং হাই প্রাইস পর্যন্ত ফিবো টেনে নিন।
#### সেল ট্রেডের জন্য:
সুইং হাই প্রাইস থেকে সুইং লো প্রাইস পর্যন্ত ফিবো টেনে নিন।
### আপট্রেন্ডে ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট
আমাদের প্রথম কাজ হল চার্টে স্ট্রাকচার ম্যাফিং করা এবং বাই অথবা সেল সেটআপ নির্ধারণ করা। মনে করুন চার্টে আমরা আপট্রেন্ড ম্যাফিং করলাম, তাই আমরা বাই করার জন্য সুযোগ খুজছি এখন সুইং লো প্রাইস থেকে সুইং হাই প্রাইস পর্যন্ত ফিবো টানতে হবে।
উদাহরণ:
আমাদের মূল উদ্দেশ্য হল রিট্রেসমেন্ট পয়েন্ট থেকে বাই এন্ট্রি কনফার্ম করা। আমরা যে লেভেলে বাই করার চিন্তা করছি তা হল ২৩.৬%, ৩৮.২% বা ৫০% ফিবো লেভেলে।
যদি প্রাইস ৫০% ফিবোনাচ্চি লেভেল ব্রেক করে নিচে নামতে ব্যর্থ হয়। তাহলে ৫০% ফিবো লেভেল একটি স্ট্রং সাপোর্ট হিসেবে কাজ করছে। তবেএটা কি এন্ট্রির জন্য ভাল পয়েন্ট?
### ডাউনট্রেন্ডে ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট
আমরা মার্কেটে প্রাইস ডাউনট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছি। মনে করুন এখন আমরা সেল সাইডে এন্ট্রি খুঁজব। ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্টে নির্দিস্ট লেভেলে সেল এন্ট্রি করব। এইজন্য আমাদের সুইং হাই প্রাইস থেকে সুইং লো প্রাইস পর্যন্ত ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট বসাতে হবে।
#### উদাহরণ:
ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্টের প্রাইস কোন পর্যায়ে যেতে পারে সেই লেভেলগুলো দেখতে পাবো।
চার্টে দেখতে পাচ্ছেন যে ৩৮.২% এবং ৫০% ফিবো লেভেল গুলো ভাল এন্ট্রি পয়েন্ট লেভেল হিসেবে কাজ করেছে।
উপরের উদাহরণে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, ফিবো লেভেলগুলো শক্তিশালী সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স হিসেবে কাজ করেছে। যেহেতু বেশিরভাগ ট্রেডাররা এই লেভেলগুলোর দিকে নজর রাখে, সেকারণে এগুলো সাইকোলজিক্যাল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে।
### কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
– প্রাইস সবসময় একই লেভেলগুলো থেকে রিজেকশন আসবে না।
– ফিবো্নাচ্চি লেভেল অনেক সময় ব্যর্থ হতে পারে। এর কারণ হল মার্কেট প্রাইস সবসময় ট্রেন্ডিং অবস্থায় থাকে না।
**লেখকের মন্তব্য:** এই আর্টিকেলটি মূলত ট্রেডারদের জন্য যারা ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট এবং এক্সটেনশন নিয়ে কাজ করতে চান। এটি ফিবোনাচ্চি রেশিও এবং তার ব্যবহার সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা প্রদান করে। আরো বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন।
ফিবোনাচ্চির ব্যর্থতা
আমরা আগেই দেখেছি যে, সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স যতই ভালো লেভেল হোক না কেন, একসময় না একসময় তা ফেইল হয় । ফিবোনাচ্চির ক্ষেত্রেও ঠিক একই রকম হয় ।
ফিবোনাচ্চির কাজ করার সীমাবদ্ধতা
ফিবোনাচ্চি মূলত ট্রেন্ডিং মার্কেটে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। ট্রেডাররা রিট্রেসমেন্ট লেভেল গুলোতে ট্রেড এন্ট্রি করে থাকে। কিন্তু যখন মার্কেটে প্রাইস রিভার্সাল হয়, তখন ফিবোনাচ্চি অনেক সময় কাজ করে না। এছাড়া,প্রাইসের সুইং হাই এবং সুইং লো নির্ধারণ করাও কঠিন হয়ে প্রে। সব ট্রেডার একই টাইম ফ্রেম ব্যবহার করে না বলে মার্কেটে ভিন্ন মত দেখা যায়।
উদাহরণ:
চার্টে আপট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে ট্রেডাররা রিট্রেসমেন্ট লেভেলে বাই খুঁজবে।
৫০% বা ৬১% ফিবোনাচ্চি লেভেল ভাল এন্ট্রি পয়েন্টের ইন্ডিকেট দিলেও কিন্তু, পরবর্তীতে প্রাইস রিভার্স করেছে।
ফিবোনাচ্চি থেকে কি শিখতে পারি?
ফিবোনাচ্চি লেভেল অন্যান্য টেকনিক্যাল টুলের মত সার্থকতার উচ্চ সম্ভাবনা প্রদান করে, কিন্তু মাঝে মাঝে ফিবোনাচ্চিও ব্যর্থ হয়। কখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারা যাবে না যে প্রাইস কখন কোন এরিয়া থেকে রিভার্স করবে। কোন সময় প্রাইস ৩৮.২% ফিবোনাচ্চি লেভেল থেকে রিট্রেস করে আসে, আবার কখনও ৫০% লেভেল থেকেও প্রাইস রিট্রেস করে থাকে। অনেক সময় প্রাইস সব ফিবোনাচ্চি লেভেল কে ভেঙে রিভার্স হয়।
ট্রেডারদের ভিন্নতা এবং পক্ষপাত
বিভিন্ন ট্রেডাররা বিভিন্নভাবে চার্ট বিশ্লেষণ করে এবং ভিন্ন টাইমফ্রেম ব্যবহার করে। ট্রেডারদের মার্কেটের প্রতি নিজস্ব বায়াসনেস বা পক্ষপাতও থাকে।
আমরা ১০০% ভবিষ্যৎ দেখতে পারি না। তাই আমরা যা করতে পারি তা হল, বিভিন্নভাবে মার্কেট এনালাইসিস করে লসের হার কমানোর চেষ্টা ক্রে থাকি। ফিবোনাচ্চি একটি মূল্যবান টুলস, তবে এটি ১০০% নির্ভুল তা কিন্তু নয়। সতর্কতার সাথে এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল টুলস সহ একসাথে সাথে ব্যবহার করলে এটি অধিক কার্যকর হতে পারে।
ফিবোনাচ্চি এবং সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স
বিভিন্ন টেকনিক টুলস ব্যবহার করে ফিবোনাচ্চি লেভেলের সার্থকতার হার বাড়ানো যায়। সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স লেভেলের সাথে ফিবোনাচ্চি লেভেল ব্যবহার করলে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়।।
যদি সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স কাছাকাছি ফিবো লেভেলের পাওয়া যায়, তাহলে সেই লেভেল না রেসপেক্ট করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আপনার মনে হতে পারে কেন এই সম্ভাবনা বাড়ে?
এর কারণ:
অন্যান্য ট্রেডাররাও এই লেভেলগুলোর দিকে নজর রাখে এবং সেই অনুযায়ী তাদের ট্রেড সেটআপ করে।
উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাক:
আমরা একটি চার্ট দেখি।
বাইএন্ট্রি নেয়ার জন্য আমরা মূলত সুইং লো প্রাইস থেকে সুইং হাই পর্যন্ত ফিবো ড্র করি।
আমরা ছবির প্রাইসের একটি নির্দিস্ট রেজিস্টেন্স ড্র করি।
ফিবোনাচ্চি ৫০% লেভেল এবং রেজিস্টেন্সের প্রাইসের মধ্যে জায়গাটা কি এন্ট্রির জন্য একটি ভাল পয়েন্ট?
পরবর্তীতে কি হয় তা দেখার আগে, আপনি একটি সিদ্ধান্ত নিন: আপনি ট্রেড ধরে রাখবেন, নাকি ক্লোজ করে দেবেন?
যদি সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স জোন ব্যবহার করি তাহলে কি কনফিডেন্স বাড়ে না?
এর কারণ কি?
অনেক ট্রেডার ফিবোনাচ্চি এবং সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স ব্যবহার করে। এই লেভেলগুলো বাই এবং সেলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেল হিসেবে কাজ করে। রিট্রেসমেন্টে সবাই ট্রেড থেকে বের হয়ে যায় না। যদিও কোনো গ্যারান্টি নেই যে প্রাইস ট্রেন্ডের বিপরীতে চলবে না, তবে ট্রেড করার সময় এইসব টুল ব্যবহার করে একটু বেশি কনফিডেন্স নিয়ে ট্রেডে এন্ট্রি করা যায়।
মনে রাখবেন, আমরা ভবিষ্যৎ দেখতে পাই না। আমরা ট্রেড করি সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে। তাই যদি উচ্চ সম্ভাবনা দিয়ে ট্রেড করতে পারি, তাহলে আমাদের ট্রেডে প্রফিট করার হার বেড়ে যায়।
ফিবোনাচ্চি এবং ট্রেন্ডলাইন
আমরা আগেই বলেছি যে, ফিবোনাচ্চি ট্রেন্ডিং মার্কেটে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। ট্রেন্ডলাইন ট্রেডারদের ট্রেন্ড নির্ধারণে সহায়তা করে। তাই ফিবোনাচ্চি এবং ট্রেন্ডলাইন একসাথে ব্যবহার করলে ভালো ট্রেডিং সুযোগ খুঁজে বের করা সহজ হয়।
উদাহরণ:
নীচের চার্টে আমরা একটি ট্রেন্ডলাইন দেখতে পাচ্ছি যা আপট্রেন্ডের সংকেত দিচ্ছে। ট্রেন্ডলাইনের সাথে ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট যোগ করেছি। এখানে আমাদের উদ্দেশ্য হল প্রাইস যখন ট্রেন্ডলাইনের কাছাকাছি আসবে তখন বাই করা।
আমরা আশা করতে পারি যে প্রাইস ৫০% ফিবো লেভেল টাচ করবে। কিন্তু এখানে দেখতে পাচ্ছি যে প্রাইস ট্রেন্ডলাইন টাচ করেই উপরের দিকে চলে গেছে।
ফিবোনাচ্চি লেভেলকে ট্রেন্ডলাইনের সাথে ব্যবহার করলে ভাল ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর কারণ অনেক ট্রেডার এই টুলগুলো ব্যবহার করে থাকে। যদিও আমরা জানি না অন্যরা কিভাবে ট্রেন্ডলাইন ড্র করছে, কিন্তু আমরা জানি যে এখানে একটি ট্রেন্ড ফর্ম হচ্ছে। আর আপনি যদি জানেন যে ট্রেন্ড ফর্ম হচ্ছে, তাহলে আপনি অবশ্যই সেই দিকে ট্রেড করার চিন্তা করবেন।
ফিবোনাচ্চি এবং ক্যান্ডেলস্টিক সমন্বয়
আগে আমরা দেখেছি যে, ট্রেন্ডলাইন এবং সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স আমাদের ভালো এন্ট্রি পয়েন্ট খুঁজে বের করতে সহায়তা করে। ক্যান্ডেলস্টিকও আমাদের ট্রেন্ড দুর্বল বা রিভার্সালের সংকেত দিতে পারে। তাই ফিবোনাচ্চি এবং ক্যান্ডেলস্টিক একসাথে ব্যবহার করলে, আমরা ট্রেন্ডের এক্সস্টিভ (exhaustive) পয়েন্ট অর্থাৎ যেখানে ট্রেন্ড শেষ হতে পারে বা প্রাইস অন্যদিকে মুভ করতে পারে, তা সহজেই খুঁজে বের করতে পারি।
উদাহরণ:
নিচের চার্টে আমরা একটি আপট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছি। সুইং লো থেকে সুইং হাই পর্যন্ত ফিবোনাচ্চি ড্র করেছি। এখন প্রাইস অন্যদিকে মুভ করছে এবং আমরা একটি ভালো ফিবোনাচ্চি পয়েন্টে বাই করার টার্গেট করছি।
আমরা দেখতে পাচ্ছি যে প্রাইস ৬১%-৭৮% ফিবো লেভেলে এসে একটি পিনবার ক্যান্ডেল তৈরি করেছে। এইখানে পিন বার ফর্ম হওয়ার মানে হচ্ছে, বায়াররা এই পয়েন্টে ক্লান্ত (exhausted) হয়ে গেছে। তাই, ফিবোর গলদেন রেটিও রিট্রেসমেন্টে সেল করলে লাভের সম্ভাবনা বাড়ে।
পরবর্তীতে দেখতে পাচ্ছি যে যখন ০% ফিবো ভেঙ্গে কিছুটা নেমে আবার পুলব্যাক হয়েছে। এই পয়েন্টে অনেক ট্রেডার তাদের ট্রেড ক্লোজ করে দিয়েছে, আর যারা ট্রেড ধরে রেখেছে তারা আরো প্রফিটের আশায় ট্রেড ধরে রেখেছে।কিন্তু এবার ও ফিবো নতুন সুইং লো থেকে হাই করে প্রাইস ৫০% ফিবো থেকে আবার ট্রেন্ডের ডিরেকশনে মুভ করছে।
ফিবোনাচ্চি লেভেলকে ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্নের সাথে ব্যবহার করলে ভালো ট্রেডিং ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কারণ, ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন আমাদের প্রাইস এক্সস্টিভ পয়েন্ট এবং রিভার্সাল সংকেত দিতে পারে। এর ফলে আমরা ভালো এন্ট্রি পয়েন্ট খুঁজে পেতে সক্ষম হই এবং আমাদের ট্রেডে লাভের সম্ভাবনা বাড়ে।
### ফিবোনাচ্চি এক্সটেনশন (Fibonacci Extension)
ফিবোনাচ্চি এক্সটেনশন একটি টুল যা আমরা সম্ভাব্য পয়েন্ট বের করতে ব্যবহার করি যেখানে প্রাইস যেতে পারে। ফিবো রিট্রেসমেন্টের মত করেই আমরা ফিবো এক্সটেনশন ড্র করি। যদি
মার্কেটে প্রাইস ট্রেন্ড ডিরেকশনে মুভ করে থাকে, তাহলে আমরা একটি সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স জোন পেয়ে যাই। চলুন দেখি কিভাবে এটি কাজ করে।
উদাহরণ:
নিচের চার্টে আমরা একটি আপট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছি। সুইং লো থেকে সুইং হাই পর্যন্ত ফিবো ড্র করেছি। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ৫০% ফিবো আমাদের জন্য একটি ভালো এন্ট্রি পয়েন্ট। এখন আমরা ফিবো এক্সটেনশন ড্র করি। ফিবো এক্সটেনশন ড্র করার জন্য সুইং লো থেকে সুইং হাই পর্যন্ত টানি।
আমরা এখন ফিবো এক্সটেনশন লেভেলগুলো দেখতে পাচ্ছি, যে প্রাইস ফিবো এক্সটেনশন লেভেলগুলো ভেঙে আবার রিট্রেস করছে। চার্টে দেখলে আমরা দেখতে পাব যে, প্রাইস ১৬১.৮% পর্যন্ত এক্সটেন্ড করেছে। এখন আপনি এই পর্যায়ে ট্রেড ক্লোজ করতে পারেন বা আরো লাভের আশায় ট্রেড ধরে রাখতে পারেন। যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলেও আপনার ট্রেড প্রফিটেবল অবস্থায় ক্লোজ হবে।
যদি ট্রেড ধরে রাখেন:
নিম্নের চার্টে আমরা দেখতে পারছি যে ০% ফিবো রিট্রেসমেন্ট এবং ১৬১.৮% ফিবো এক্সটেনশন একটি সাপোর্ট জোন তৈরি করেছে। এটা ব্রেক করতে পারে, কিন্তু যদি ব্রেক না করে, তাহলে আমরা আরো অনেক পিপস প্রফিট করতে পারি। এটা আপনার সিদ্ধান্তের বিষয় যে আপনি ট্রেড ধরে রাখার রিস্ক নিবেন নাকি ট্রেড ক্লোজ করবেন। মনে রাখবেন, যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলেও আপনি এখানে লাভবান।
#### যদি আরো প্রফিটের আশায় ট্রেড ধরে রাখেন:
তাহলে দেখতে পাবেন যে প্রাইস ১৬১.৮% ফিবো এক্সটেনশনও ব্রেক করে গেছে।
### ফিবো এক্সটেনশনের কিছু সমস্যা:
1. **ফিবো এক্সটেনশন লেভেলগুলো সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স হিসেবে সবসময় কাজ নাও করতে পারে:** যে কোন সময় একটি সাপোর্ট বা রেজিস্টেন্স কাজ নাও করতে পারে।
2. **সুইং হাই ও সুইং লো নির্ধারণ করা:** ফিবো এক্সটেনশন ড্র করতে গেলে সঠিকভাবে সুইং হাই ও সুইং লো নির্ধারণ করা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আপনি যেখানে ফিবো রিট্রেসমেন্ট ড্র করেছেন, সেখানেই ফিবো এক্সটেনশন ড্র করতে পারেন অথবা পূর্বের ৩০টি ক্যান্ডেলের মধ্য থেকে সুইং লো এবং সুইং হাই বেছে নিতে পারেন।
এখানে কোন সঠিক নিয়ম নেই। সময়ের সাথে সাথে আপনি আরো ভালো সিদ্ধান্ত নিতে শিখবেন।
### ট্রেড ক্লোজে ফিবোনাচ্চির ব্যবহার
আমরা যখন ট্রেডে এন্টার করি, তখন আমাদের একসময় ট্রেড ক্লোজও করতে হবে। ট্রেড ক্লোজ করতে বিভিন্নভাবে ফিবো ব্যবহার করা যায়। একটি পদ্ধতি হল, আপনি যেই ফিবো লেভেলে এন্ট্রি করছেন, তার পরের ফিবো লেভেল ছাড়িয়ে স্টপ লস দেয়া।
#### ফিবো এক্সটেনশন
নিচের চার্টে একটি ডাওনট্রেন্ড দেখাচ্ছে। আপনি একটি ভালো এন্ট্রি পয়েন্ট খুঁজছেন, যা সাধারণত ফিবো ৩৮.২% – ৬১.৮% লেভেলের মধ্যে হয়। পরবর্তীতে পড়ার আগে কোন পয়েন্টে এন্টার করতে চান তা নির্ধারণ করুন।
– যদি আপনি ৩৮.২% ফিবো লেভেলে এন্টার করেন, তাহলে স্টপ লস ৫০% ফিবোর নিচে সেট করবেন।
– যদি ৫০% ফিবোতে এন্টার করেন, তাহলে স্টপ লস ৬১.৮% ফিবোর উপর সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্সের উপর সেট করবেন।
ফিবো এক্সপানশন
যদি ৫০% লেভেল আপনি এন্ট্রি নিতেন তবে আপনি লাভ করতেন কিন্তু ৩৮% এ এন্ট্রি নেয়ার কারনে লস করলেন। তবে আপনি যদি নিশ্চিত হতে পারতেন প্রাইস এই সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স ভাংবে না তবে আপনি লাভ অবশ্যই করতে পারতেন। এই সিস্টেমে আপনাকে হাই একুরেট এন্ট্রি নিতে হবে না হলে লস করার সম্ভবনা আছে। মার্কেট কখন ও আপনার মনের মত মুভ মেন্ট করবে না তাই স্টপ লস সেট করে ট্রেড করতে হবে।
#### আরেকটি পদ্ধতি: সুইং হাই বা সুইং লো এর নিচে স্টপ লস সেট করা
এই পদ্ধতি আপনার ট্রেডকে মুভ করার জন্য বেশি জায়গা দেয়। এই ধরনের স্টপ লস লং টার্ম ট্রেডের জন্য কার্যকর। একটি কথা মনে রাখবেন, আপনার লট সাইজ স্টপ লস অনুযায়ী সেট করুন।
উপরের চার্টটা আরেকবার দেখুন। ৩৮.২% ফিবোতে ট্রেড করলে আপনার স্টপ লস হিট করত। কিন্তু যদি স্টপ লসটা সুইং লো এর নিচে থাকত, তাহলে এটি লাভজনক ট্রেডে পরিণত হত।
### স্টপ লস সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
1. **লট সাইজ স্টপ লস অনুযায়ী ঠিক করুন:** আপনার ট্রেডিং ক্যাপিটাল ও রিস্ক ম্যানেজমেন্টের ওপর ভিত্তি করে লট সাইজ ঠিক করা উচিত।
2. **ফিবো স্টপ লস নির্ধারণের একমাত্র টুল নয়:** ফিবো ছাড়াও অন্য টুল ব্যবহার করা যেতে পারে।
3. **বর্তমান মার্কেট এনভায়রনমেন্ট বিশ্লেষণ করুন:** মার্কেটের বর্তমান পরিস্থিতি ও ট্রেন্ড বিশ্লেষণ করা উচিত।
4. **বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে উওম স্টপ লস পয়েন্ট বের করুন:** শুধু ফিবো নয়, অন্যান্য টেকনিক্যাল টুলও ব্যবহার করতে পারেন।
এভাবে ফিবোনাচ্চি ব্যবহার করে আপনি ট্রেড ক্লোজ করতে পারবেন এবং ট্রেডিংয়ে সফলতার সম্ভাবনা বাড়াতে পারবেন।
Add a Comment
You must be logged in to post a comment